মোঃ মীরজাহান মিজান, বিশেষ প্রতিনিধি, জগন্নাথপুর::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বোরো মৌসুমের ধান কাটা সম্পন্ন হওয়ায় হাওরের পানি প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে উপজেলার বৃহত্তম নলুয়া হাওরের হামহামি ও মনাইখালি এলাকায় নির্মিত সুইচগেট খুলে দেওয়া হয়। এর আগের দিন রোববার বিকেলে একই হাওরের ইকড়ছই এলাকার গেটটিও খুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এই তিনটি গেট খুলে দেওয়া হয়। সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল জানান, “হাওরের প্রতিটি জায়গায় ধান কাটা শেষ হয়েছে এবং নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই তিনটি সুইচগেট খুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে করে হাওরে পানি প্রবেশ করতে পারে।”
নলুয়া হাওরের অংশবিশেষ চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, “প্রায় দেড় মাস হাওরবাসী ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এখন হাওরে ধান নেই, কিন্তু নতুন পানি ঢুকছে, এতে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমদ জানান, এ বছর জগন্নাথপুরের ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। শতভাগ ফসল কাটা সম্পন্ন হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন ধান। যা বাজারমূল্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ। তিনি বলেন, “এবারের ফলন ছিল বাম্পার, কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।”
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ হুঁশিয়ার করে বলেন, “প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কেউ ফসলরক্ষা বাঁধ কাটতে পারবে না। নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাওরে নতুন পানি আসায় মাছ ধরার মৌসুম শুরুর অপেক্ষায় দিন গুনছে হাওরের মানুষ। একদিকে ফসল ঘরে, অন্যদিকে মাছ ধরার প্রস্তুতি—জীবনচক্রে নতুন আবর্তন শুরু হলো হাওরাঞ্চলে।