
মোঃ মীরজাহান মিজান, বিশেষ প্রতিনিধি, জগন্নাথপুর:
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় অসময়ে তরমুজ চাষ করে সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন স্থানীয় কৃষক খলিল মিয়া। আমন ও বোরো ধাননির্ভর এই অঞ্চলে ভিন্নধর্মী ফসল চাষ করে তিনি যেমন লাভবান হয়েছেন, তেমনি আশপাশের কৃষকদের মাঝেও নতুন উদ্যম ও আগ্রহ সৃষ্টি করেছেন।
চলতি মৌসুমে উপজেলার বলবল গ্রামের পলিভরাট মইয়ার হাওরে প্রায় ৬ কেদার জমিতে তরমুজ এবং ৭৫০টি মিষ্টি লাউ গাছের চাষ করেন খলিল মিয়া। অনেকের কাছে যা শুরুতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এখন তা বাস্তব সাফল্যে পরিণত হয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর শুক্রবার তিনি ক্ষেত থেকেই প্রায় ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেন। এর আগে গত সপ্তাহে কালো জাতের তরমুজ বিক্রি করে আয় করেন আরও ৯৫ হাজার টাকা। সামনে আরও বিপুল পরিমাণ তরমুজ বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
খলিল মিয়া জানান, গত বছর শ্রমিক সংকটের কারণে তরমুজ চাষ করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার আগেভাগে শ্রমিক নিশ্চিত করায় চাষাবাদে কোনো বাধা আসেনি। প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হলেও ইতোমধ্যে লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি রমজান মাসের বাজার লক্ষ্য করে তিনি সাদা জাতের তরমুজও চাষ করেছেন, যা সময়মতো বাজারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, “খলিল মিয়ার মতো উদ্যোগী কৃষকেরা অসময়ে ফসল উৎপাদন করে ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে পতিত জমি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে এবং অন্য কৃষকরাও উৎসাহিত হচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জগন্নাথপুরের কৃষিপণ্য দেশের বাইরেও রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হবে।”
কৃষকদের নতুন চিন্তাধারা ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি গ্রহণের ফলে জগন্নাথপুরের কৃষিখাতে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, তা দেশের কৃষির ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।